Header Ads

Header ADS

আশরাফ চঞ্চল এর কবিতাগুচ্ছ

আশরাফ চঞ্চল এর কবিতাগুচ্ছ


স্বাপ্নিক নারী-

 তোমার শরীরের ঘ্রাণ পেলে উড্ডীন ঘেমের মতো গড়াতে গড়াতে বৃষ্টির জল হয়ে যাই 

নিখাদ ত্রিভুজ মোহনায়!

আমার স্পর্শকাতর ঠোঁট অবলীলায় ছুঁয়ে দেয় দেহের ভাঁজের গোপনীয় উপত্যকা

আঁশটে গন্ধের লবণ সমুদ্র!

তুমি লজ্জাবতী লতার মতো অযথা নিজেকে লুকাও

তুমি যে আমার শস্যক্ষেত ফুল পাহাড় নদী

মনের গহীনের শ্বেত পদ্ম!

তুমি আমার মধ্যরাতের আবেগঘণ দুর্লভ মুহুর্ত

হাইওয়ের বিলাস বহুল পানসি হোটেল

বিপুল খাদ্যের স্বর্গ রাজ্য!



কক্ষচ্যুত

আমাকে ফিরায়া লাভ নেই

কক্ষচ্যুত হয়ে গেছি

অদমনীয় এক আকর্ষিক শক্তি ক্রমেই টেনে নিয়ে যাচ্ছে অন্য গোলার্ধের দিকে!

যেন মোমের মতো গলে গলে বাতাসে মিশে যাচ্ছি

সম্মুখে লবণ সমুদ্র

দেহভাঁজের দুর্গম উপত্যকা

আট কুঠুরির গোপন দরোজা!

জানিনা অন্দরমহলের তালাচাবি কার কাছে আছে!



আমাকে জানতে এক চাপুন

আমি মধুখোর

মধু খুঁজি

মধু খাই

আমি মনচোর

মন খুঁজি

মন চাই

আমি কাম সখা

ঠোঁট রসে

যোনি চুষে

মজা পাই!

আমি অবলীলায়

প্রতিনিয়ত

নিজেকে

সাজাই।



শীতার্ত রাতের কবিতা

তোমার দেহে লুকিয়ে আছে লোভাতুর এক সুড়ঙ্গ

আচানক আবেগের খনি

অমৃতময় জল তরঙ্গ!

কনকনে শৈত্য প্রবাহের রাতে

সিঁড়ির দুয়ার খুলে নেমে যাবো পাতালগুহায়-

কুসুম গরম জলের নদীতে!

তোমার শরীরের ভাঁজ রেখায়

পেন্ডুলামের মতো ঘুরতে ঘুরতে

ঠোঁটের আদ্রতায় ছড়িয়ে দেবো মহুয়া নির্যাস!

আমার পরনের অন্তর্বাসের ভেতর ইটখোলার চিমনির মতো সর্বদা গোপনে দাঁড়িয়ে থাকে বহুগামী শিশ্নদন্ড!



নাভির ঘ্রাণ

অঘ্রাণে রোদ পোহাচ্ছি। দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা নামুক। কুয়াশায় শিরশিরে শীতে নিশুতিরাতে তোমার দুয়ারে এসে হানা দেব।

কুমড়ো ক্ষেতে থরথরে ফুটে আছে কাশ্মিরে লতা! গোলাপি ঠোঁটের মত বকফুল! চালতা ভিজানো জলের মত টুকটুকে লাল সুন্দর!

কাক ডুমুর বনে হরিণি হাসে রাতভর। হারিকেনের লকলকে সলতের মত যুগল পাহাড় অভিমুখে ছুটে যায় উজবুক জিহ্বা। স্পর্শ কাতর নির্লজ্জ পাঁচজোড়া আঙুল!

আমি তো চিনিনা পথ। গোপাট ধরে হাঁটতে হাঁটতে কোনদিকে অপার নদী! গিরিখাত! আচানক উপত্যকায় দ্রাক্ষারসের ত্রিভুজ মোহনা!

আমি মজনু নই। আমি রাবণের মত হিংসুটে কামুক। যতই লজ্জাবতী লতার মত কুঁকড়ে যেতে থাকো- তবুও তোমাকে ছুঁয়েই যাব আমি! নাভিমূলে চেপে ধরব ঘ্রাণ বিলাসি নাসারন্ধ্র!



কমলাপুর

ভেবেছিলাম কমলাপুরে বুঝি কমলা থাকে

খেতে এসে দেখি কোথাও কমলা নেই

আছে শুধু ট্রেন

রেললাইন

অসংখ্য মানুষ!

ট্রেন আসছে যাচ্ছে

মানুষ উঠছে নামছে

কী এলাহি কারবার!

একটি মেয়ে মাইক্রোফোনে সুরেলা কন্ঠে বলছে-

সম্মানিত যাত্রী বৃন্দ,অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই জয়ন্তিকা ট্রেনটি নম্বর প্লাটফর্ম থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে...

বোকা কালান্তরের দল!

যে স্থানের নাম হওয়ার কথা ছিল রেলপুর/ট্রেনপুর

সে স্থানের নাম রেখেছে কমলাপুর!



নতুন বছরের ভালোবাসা

এসো নতুন হই নতুন বছরের নতুন দিনে

হৃদয়ের কালিমা লেপে দিই   ভালোবাসার প্রলেপ দিয়ে!

এসো বাড়াই বন্ধুত্বের হাত আজন্ম শত্রুর দিকে

হিংসা ভেদাভেদ ভুলে সকলেই মানুষ হই!

নজরুল জীবনানন্দ জসীমউদ্দিনের রুপসি বাংলায় এসো সাম্যের গান গাই!

এসো ভালোবাসা বিলিয়ে দিই সকলেই সকলের দিকে!

ভালোবাসায় পাথরেও ফুল ফুটে এটম বোমা ছুটে যায় শূন্যের দিকে!

 

জলচর

আমি জলে জলে ঘুরিফিরি মেঘের সন্ন্যাসী

গলতে গলতে বৃষ্টি হই

তাপে বাষ্প হয়ে উড়ি!

আমি চুম্বনে চুম্বনে কামগঙ্গার জল হই

গোপন সমুদ্র ভরে দিই লবণে লবণে

জোয়ারে ভাটায় মিশে থাকি একাকার হয়ে!

 

স্মৃতি

শীতের কুয়াশার মতো আস্তে আস্তে

মিলিয়ে যাচ্ছি-স্মৃতি

মিষ্টিমাখা রোদে...

সোনালী ধানের ক্ষেতে

খয়েরী শালিক উড়ছে

রসুইঘর থেকে ভেসে আসছে

নতুন চালের ভাতের ঘ্রাণ!

বাড়ির গোপাটের দু'ধারে

মাষকলাই ক্ষেত

হলুদ ফুল

একটু হাঁটলেই দেওয়ানগঞ্জের হাট।

মায়ের শোয়ার ঘরে মালসায় তোষের আগুন জ্বলে সারারাত!

বাংলার অবারিত মাঠে

ঘাটে

পথে

প্রান্তরে

আমি খুঁজে ফিরেছি হারানো শৈশব!

 

পতন

সারারাত জেগে থাকি

দুচোখে কিছুতেই আসে নাকো ঘুম

দুয়ারে বিষন্ন রাত্রি ওড়ে পেঁচার ভয়ার্ত চোখের মতো অবিকল!

মনের দেয়ালে যেন কার ছায়াছবি ভাসে

সুরেলা কন্ঠস্বরে ডেকে উঠে আদুরে ময়না পাখি

কাঁচের বৈয়ামে সযত্নে ভরে রাখি- দেহের সব কামসত্ত্ব আর গোপন শিল্পকলা!

ল্যাম্পপোস্টের নিয়ন আলোয় লুকিয়ে রাখি নিজের ছায়ারঙ

গিরিবালা আসেনা কাছে-

বুকের চৌকাঠ খুবলে খায় রাক্ষসে এক ঘুণ!

 

বলাৎকার

বুঝিনা-

কেন যে হুজুর

পুরোহিত

পোপ

মুনি

বলাৎকারের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়!

আমার খুব ঘেন্না ঘেন্না লাগে-

মন চায়

ধরে ধরে

ওদের নুনুগুগো কেটে হিজড়া বানিয়ে ফেলি!


জ্যামিতিক ত্রিভুজ চিহ্ন

 একই বিন্দু থেকে সমান দূরত্বে ঘুরে এসে তুমি বৃত্ত হয়ে গেলে

আমি কেন্দ্র বিন্দুতে প্রতি কোণ ৯০ ডিগ্রি ব্যাসের ত্রিভুজ চিহ্ন আঁকতে গিয়ে

প্রথমে লম্ব হলাম

তারপর তিনটি বিন্দু স্কেল আর পেন্সিলে যোগ করলাম-

গণিতের স্যার ট্রায়াল খাতায় এঁকে দিলেন গোল চিহ্ন!

সেই থেকে যোগ বিয়োগের হিসেব ভুলে বার্ষিক পরীক্ষার খাতায় এঁকে দিলাম চুম্বন চিহ্ন

কী ভেবে বিএসসি ম্যাডাম আমাকে দিলেন ১০০ তে ৯৯!

চালাক ম্যাডাম হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন নইলে যে পরের ড্রমে পুরো পৃষ্ঠা জুড়ে এঁকে দেবো স্পর্শকাতর অলৌকিক এক ত্রিভুজ চিহ্ন!



আরো পড়ুন- সুশান্ত সেরে কবিতা

Powered by Blogger.